শিশুকালীন যৌন হয়রানি রোধে মায়েদের জন্য ১৩টি গুরুত্বপূর্ণ উপদেশ জে‌নে রাখুন!

baby care islamic rules

শিশুকালীন যৌ*ন হয়রানি রোধে মায়েদের ১৩টি গুরুত্বপূর্ণ উপদেশঃ

শিশুদের যৌন হয়রানি একটি গুরুতর এবং দুর্ভাগ্যজনক সমস্যা। এটি প্রতিরোধ করার জন্য ব্যক্তিগত, পারিবারিক এবং সামাজিক স্তরে সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।  শিশুদের সচেতন করুন: শরীরের বিষয়ে শেখান: শিশুদের তাদের শরীরের বিভিন্ন অংশ, বিশেষ করে "ব্যক্তিগত অঙ্গ" সম্পর্কে সঠিক নাম ধরে শেখান। ভালো স্পর্শ ও খারাপ স্পর্শ: শিশুদের ভালো স্পর্শ (যেমন আদর বা আলিঙ্গন) এবং খারাপ স্পর্শের (যেমন অস্বস্তিকর, ব্যথাদায়ক বা গোপনীয় স্পর্শ) মধ্যে পার্থক্য শেখান। 


শিশুদের স্পষ্টভাবে "না" বলতে এবং যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি থেকে দূরে থাকতে উৎসাহিত করুন। গোপনীয়তা সম্পর্কে বোঝান: শিশুদের "ভালো গোপন" (যা আনন্দ দেয়, যেমন কোনো সারপ্রাইজ) এবং "খারাপ গোপন" (যা অস্বস্তি, ভয় বা অপরাধবোধ তৈরি করে) এর পার্থক্য শেখান। 

উপদেশ: ১. সন্তান এ সামনে নিজেরা কাপড় পরা/বদলানো থেকে বিরত থাকুন। জাগ্রত শিশু সন্তানের সামনে যৌন মিলন থেকেও বিরত থাকুন এবং যত্র-তত্র উলঙ্গ অবস্থায় যেতে নিষেধ করুন। ইসলাম নির্দেশিত সতর ঢেকে রাখুন এবং শিশুদের সতর সম্পর্কে জ্ঞান দান করুন। [ইসলামের দৃষ্টিতে শিশু পরিপালন-নীতিমালা]

উপদেশ: ২.  আপনার  মেয়ে শিশুকে অন্য কারো (অপরিচিত লোক) কোলে বসতে দেওয়ার ব্যাপারে সতর্ক থাকুন, এমনটি নিজস্ব আত্মীয়- স্বজনদের ব্যাপারেও সতর্ক থাকুন। ছোটবেলা থেকে পর্দার ব্যাপারে সচেতনতা তৈরি করুন। [আদাবুল মোয়াশারাত]

উপদেশ: ৩. বিশেষভাবে মেয়ে সন্তানকে খেলাধুলায় সঙ্গী নির্বাচন করার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকুন। খেয়াল রাখুন আপনার সন্তান যখন বন্ধুদের সাথে খেলতে যায় তখন তারা কি ধরনের খেলা খেলছে? নিছক বিনোদন বা সময় কাটানো জাতীয় খেলাধুলা ছাড়া অন্য সব ধরনের খেলাধুলা থেকে বিরত রাখুন। লক্ষ্য রাখুন শিশুদের খেলাধুলার বিষয় যেন, বিয়ে-শাদি বা সংসার না হয়। [আদাবুল মোয়াশারাত]

উপদেশ: ৪. খেয়াল রাখবেন কেউ যেন দুস্টামি করেও আপনার মেয়ে সন্তানকে কখনো আমার বউ বা আমার ছেলের বউ ইত্যাদি কথা না বলে। কারণ এতে করে সন্তানের মাঝে অপরিনত বয়সেই বিয়ের মানসিকতা সৃষ্টি হতে পারে। ইসলাম বৈধ উপায়ে যথার্থ সময়ে বিয়ের আদেশ দিয়েছে। আগেও নয় এবং খুব পরেও নয়। [আদাবুল মোয়াশারাত]

উপদেশ: ৫. অন্য প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ কিংবা মহিলার কাছে আপনার মেয়ে সন্তানকে পাঠানোর ক্ষেত্রে সতর্ক থাকুন এবং জোর করে এমন কোথায় তাকে পাঠানো থেকে বিরত থাকুন- যেখানে সে যেতে চায় না।। এমনকি আপনি যদি কখনো খেয়াল করেন, কেউ আপনার মেয়ে সন্তানকে খুব বেশি আদর- সোহাগ করছে, তাতেও সতর্ক থাকুন।  কারণ মানুষ মাত্রই ভুলকারী। শয়তান যে কোনো সময় যে কোনো মানুষকে ধোকায় ফেলতে পারে, তাই সর্বোচ্চ সতর্ক থাকা উচিত। [আদাবুল মোয়াশারাত]

উপদেশ: ৬. সাবধানতা এবং সতর্কতার সাথে আপনার মেয়েকে বয়ঃসন্ধীকালীন সঠিক যৌন শিক্ষা প্রদান করুন এবং তাকে এই সময়কালীন বিভিন্ন অপকারিতা সম্পর্কে সচেতন করুন। তাকে প্রিয়ডের সময়ে করনিয় বিষয়গুলো সম্পর্কে শিক্ষাদান করুন ।  তাকে এটাও বুজান এটা প্রতিটা নারীর জীবনেরই একটি আবিচ্ছেদ্য অংশ। আপনার মেয়ে সন্তানকে জানতে সাহায্য করুন, ইসলাম কেন এই সময় ইবাদত-বন্দেগি করতে নিষেধ করেছেl [আদাবুল মোয়াশারাত]

উপদেশ: ৭. যদি কখনো দেখেন হঠাৎ করে আপনার মেয়েটি কেমন নিশ্চুপ হয়ে গেছে, সতর্কতার সাথে কারণ আবিস্কার করার চেষ্টা করুন এবং কারণ দূর করুন। আপনার কাছে কারণ যদি যৌন হয়রানি আবিস্কৃত হয় তাহলে  তাকে বোঝানোর চেষ্টা করুন এটা ভুল  এবং এই ভুল থেকে দূরে থাকা উচিত।  আর সাথে সাথে ইসলামি বিধি নিষেধগুলো তাকে জানান। ইসলাম নির্দেশিত যৌন  হয়রানির শাস্তি ও পরিণামের কথা তাকে জানান। [আদাবুল মোয়াশারাত]

উপদেশ: ৮. অনেক মায়েদের দেখা যায় বাচ্চাদের ঠাণ্ডা রাখার জন্য বিভিন্ন কার্টুন ও মুভি দেখান- এটা কখনোই করবেন না। কারন ছোটবেলাতেই এসব জিনিস বাচ্চাদের মানসিকতায় বিশেষ প্রভাব বিস্তার করে। আর ইসলাম তো এসব কার্টুন ও মুভি দেখানোকে কখনোই সমর্থন করে না। বরং এ ক্ষেত্রে বিভিন্ন ভালো গল্প শোনানো যেতে পারে।  [আদাবুল মোয়াশারাত]

উপদেশ: ৯. মেয়ে সন্তানের বয়স ৩ বছর হলে সন্তানকে টয়লেট শেষে নিজে নিজে গোপনাঙ্গ পরিষ্কার করতে শিখান এবং তাকে ইসলামের পবিত্রতার গুরুত্বের কথা জানান। তাকে শিখতে সহযোগিতা করুন ইসলাম কীভাবে পবিত্রতা অর্জন করার নিয়ম-পদ্ধতি বাতিয়েছে [আদাবুল মোয়াশারাত]

উপদেশ:১০. প্রয়োজন ছাড়া মেয়েকে সন্তানের গোপনাঙ্গ স্পর্শ করা থেকে তাকে বিরত রাখুন এবং নিজেরা বিরত থাকুন। এতে করে লজ্জাহীনতা সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।  [আদাবুল মোয়াশারাত]

উপদেশ:১১. খারাপ কাজ, মন্দ ব্যক্তি, কুরুচিপূর্ন বিষয় এবং নিন্দনীয় আচরণের তালিকা তৈরি করুন এবং মেয়েকে সেগুলো শিক্ষা দিন।এই ক্ষেত্রে আপনাকে মনে রাখতে হবে, তাকে যা কিছু জানাবেন বা বুঝাবেন সবগুলোর কারন ব্যাখা করতে হবে। [আদাবুল মোয়াশারাত]

উপদেশ:১২. আপনার সন্তান কখনো কারো বিরুদ্ধে নালিশ করলে তা হেলায় উড়িয়ে দেবেন না- তাতে সেই ব্যক্তিটি যেই হোক না কেন? মনোযোগ দিয়ে তার নালিশ শুনুন এবং যৌক্তিকতা বিচার করুন এবং মেয়েকে জানান নালিশ ও বিচারের ক্ষেত্রে ইসলাম কী বলেছে। [আদাবুল মোয়াশারাত]

উপদেশ:১৩. শিশুবেলা থেকেই আপনার সন্তানকে প্রতিকুল পরিবেশে প্রতিবাদ করার জন্য অনুপ্রেরনা দিন। কীভাবে বাজে পরিস্থিতিতে আত্মরক্ষা করবে তার ধারনা ও শিক্ষা প্রদান করুন।


যদি আপনি কোনো শিশুর যৌন হয়রানির বিষয়ে জানতে পারেন, তাহলে দ্রুত পদক্ষেপ নিন:

পুলিশকে জানান: নিকটস্থ থানায় অথবা চাইল্ডলাইন ১০৯৮ নম্বরে ফোন করে জানান। ভারতে POCSO (Protection of Children from Sexual Offences) আইন শিশুদের যৌন হয়রানি থেকে সুরক্ষা প্রদান করে।

শিশুকে সমর্থন দিন: ভুক্তভোগী শিশুকে মানসিক সমর্থন দিন এবং তাকে বোঝান যে এটি তার দোষ নয়। একজন পেশাদার কাউন্সেলরের সাহায্য নিন।

শিশুদের সুরক্ষিত রাখতে আমাদের সকলের সচেতনতা, দায়িত্বশীলতা এবং সক্রিয় ভূমিকা পালন করা অপরিহার্য।

Post a Comment

Previous Post Next Post

Contact Form