নবজাতকের ৬টি চর্মরোগ ও ঠোঁটের যত্নে করনীয় |Newborns Skin Disease and Lip Care Bangla

নবজাতকের ৬টি চর্মরোগ ও ঠোঁটের যত্নে করনীয়|Newborns Skin Disease and Lip Care Bangla

নবজাতকের যত্ন
নবজাতকের চর্ম রোগ

গ্লিসারিন ত্বকের অন্তস্থ পানিকে বাষ্পীভূত হতে দেয় না ফলে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় থাকে। এছাড়া গ্লিসারিন নিজেও ত্বকে আর্দ্রতা দেয়।

আর পেট্রোলেটাম ত্বকের ভিতরকার আর্দ্রতাকে ধরে রাখে ত্বকের ওপর একটি হালকা আবরণ তৈরির মাধ্যমে। এতে ত্বক থেকে আর্দ্রতা নির্গমনের পথ বন্ধ হয়ে যায়, ত্বক থেকে পানি বেরিয়ে যেতে পারে না।

একটু ভাল ক্রীমে আরও থাকে মিনারেল অয়েল, ভিটামিন সি এ এবং সলিউবল কোলাজেন এবং বিভিন্ন প্রাকৃতিক বনজ নির্যাস। এসব ক্রিম ত্বকের বুড়িয়ে যাওয়া ভাবকে প্রতিরোধের চেষ্টা করে এবং ত্বক সজীব রাখে।


নবজাতকের ৬টি চর্মরোগ

Prickly Heat বা ঘামাচি 

দিনের তাপমাত্রা বেশি থাকা অবস্থাতেও আমাদের মা, চাচিগণ নবজাতককে চারদিক থেকে বিভিন্ন গরম কাপড়ে জড়িয়ে রাখেন এবং এর ফলে কয়েক ঘন্টার ভিতরেই ঘামাচির সৃষ্টি হয়। প্রথম পর্যায়ে যে জাতীয় ঘামাচির সৃষ্টি হয়। তা দেখতে সাদা অথবা লাল রং বিশিষ্ট পানি পানি গোটা আকারে দেখা দেয়।

এ জাতীয় ঘামাচি চেনার মূলমন্ত্র হচ্ছে যে, ঘামাচি কখনও লোমের গোড়াতে হয় না। ঘামাচিকে যদিও মনে হতে পারে সাধারণ ব্যাপার, কিন্তু এ থেকে অনেক জটিল সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। যেমন-এ থেকে শরীরের অনেক ফোঁড়ার সৃষ্টি হতে পারে যা সারানো একটু কঠিন ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়।


আরও পড়ুন: প্রতিদিন চুলে তেল দিলে কি হয় | Girls Hair Tips Bangla 


আবহাওয়া যদি গরম থাকে তবে জন্মের পর শিশুকে একটু খোলামেলা রাখা উচিত। ঘরের জানালা খোলা থাকা উচিত। ঘামাচিতে যে কোন ট্যালকম পাউডারের ব্যবহারের উপকারে আসে।


Erathema Toxicum Neonatorum বা মাসিপিসি 

গ্রামে মা-চাচিগণ এ জাতীয় চর্মরোগকে মাসিপিসি বলে থাকেন এবং এটি নবজাতকদের হয়েই থাকে বলে তাদের ধারণা। সত্যিই এটি খুব সাধারণ ব্যাপার। এর সাথে জ্বর বা অসুস্থতার অন্য কোন উপসর্গ থাকে না। দশদিনের দিন কোন ধরনের ওষুধ ছাড়াই এটি ভাল হয়ে যায়।


Diaper Rash বা ন্যাপকিন র্যাশ 

লেঙ্গট বা জাঙ্গিয়া পরিধানে নবজাতকের লাল সমস্ত স্থান কাপড়ের সংস্পর্শে আসে সেই জায়গায় হয়ে থাকে। অর্থাৎ উরুতে বা গাদিতে লাল ভাব নিয়ে এলার্জির ন্যায় র‍্যাশ দেখা দিতে পারে।

এমতাবস্থায় কাপড় সাময়িকভাবে বর্জন করা উচিত এবং সাথে ফাঙ্গিডাল-এইচসি নামক ক্রিম দৈনিক ২ বার কিছু দিন ব্যবহারে উপকার পাওয়া যায়। একটি বিষয় এখানে জরুরী, যে সমস্ত বাচ্চার ন্যাপকিন সারা রাতে একবারও বদলানো হয় না তাদেরই এ সমস্যাটি বেশি হয়ে থাকে।


Candidiasis বা ফাঙ্গা

নবজাতকের মুখের ভিতর বিশেষ করে জিহ্বাতে। সরের মতো আস্তরণ দেখা দেয়। সুস্থ সবল শিশুর ক্ষেত্রেও এ জাতীয় সমস্যা দেখা দিতে পারে। মা-চাচীগণ এ জাতীয় সমস্যায় নরম কাপড়ে সরিষার তেল লাগিয়ে পরি করার চেষ্টা করে থাকেন । এত জিহবা পরিষ্কার হতে এবং ফাঙ্গাস হওয়ার সম্ভাবনা কমে। আসে। নিষ্ট্যাট ড্রপ আক্রান্ত স্থানে কয়েক ফোঁটা দৈনিক ৩/৪ বার লাগিয়ে দিলে কয়েকদিনের মধ্যেই এ সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়। দুধের

এ ক্ষেত্রে আক্রান্ত স্থানের চামড়া লাল লাল তার হয়ে যায় এবং এর ওপর সাদা সাদা ছোপ দেখা দেয় এবং প্রচণ্ড চুলকায়। এ থেকে মুক্তি পেতে হলে আক্রান্ত স্থানকে অবশ্যই শুকনো রাখতে হবে। পেভারিল ক্রিম দৈনিক ১/২ বার আক্রান্ত স্থানে মাখলে উপকার পাওয়া যায়।

Scabies বা পাঁচড়া 

চুলকানি, খোস পাঁচড়া ছোঁয়াচে রোগ। নবজাতককে একবার কোলে নেয়ার জন্য আত্মীয়স্বজন সবাই অধীর আগ্রহে অপক্ষো করতে থাকে । এর ভিতর একজনের যদি সামান্য খোস-পাঁচড়াও থাকে তা অতি সহজেই নবজাতককে আক্রান্ত করে। প্রতিটি আঙ্গুলের ভাঁজে, কব্জিতে হাত ও পায়ের তালুতে, বগলে, নাভি, যৌনাঙ্গে পাল এমনকি সমস্ত শরীরে ছোট ছোট গোটা আকারে চুলকানি দেখা দেয়। অতিসত্ত্বর একজন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের অধীনে এর চিকিৎসা নেয়া উচিত। কারণ যোগ- পাঁচড়াগুলো থেকে কখনও কখনও কিডনি আক্রান্ত হতে পারে।

ক্রিম ব্যবহারের নিয়ম

শীতে মুখের তথা ত্বকের শুষ্কতা দূর করার জন্য চাই কোল্ড ক্রিম । অনেকে মনে করেন যে কোন একটা ক্রিম হলেই হলো। আসলে তা নয়। ত্বকের শুষ্কতা দূর করার জন্য শীত মৌসুমে এমন ধরনের ক্রিম বা লোশন দরকার যাতে রয়েছে অধিক গ্লিসারিন এবং পেট্রোলেটাম ।

অনেকে শীতে ভ্যানিশিং ক্রিম ব্যবহার করেন, এটা ঠিক নয়। এতে ত্বকের আর্দ্রতা রক্ষা হয় না। ক্রিম লোশন কিংবা ময়েশ্চারাইজার বা আর্দ্রতাকারক প্রসাধন ব্যবহারে একটা নিয়ম রয়েছে। গোসল সেরে আসার পর শরীর তোয়ালে দিয়ে মুছে নেয়ার পরপরই এসব প্রসাধন ব্যবহার করা উচিত। গোসলের সময় শরীরের ত্বক কিছু পানি শুষে নেয়, তবে নেয়া সেই পানিটুকুকে দীর্ঘ সময় ত্বকের মধ্যে বন্দী করতে পারলেই ত্বক সজীব থাকবে। আর তাই ত্বকের বাহ্যিক পানিটুকু মুছে নেয়ার পরপরই সেখানে কোল্ডক্রিম, লোশন কিংবা ময়েশ্চারাইজার লাগাতে হবে। এতে ত্বক অধিক সজীবতা পাবে।

কিন মাখতে দেরি হলে ত্বকের পূর্ব সঙ্কিত পানি বাতাসে উবে যায়, ত্বক শুষ্ক হয়ে পড়ে। এরকম অবস্থায় ক্রিম মাখলেও উপকার আছে তবে বাড়তি আর্দ্রতা পাওয়া যায় না। এসব দামী প্রসাধনের পরিবর্তে সাধারণ গ্লিসারিন পানিতে মিশিয়েও শরীরে লাগালে কাজ হবে। ভেসিলিন বা পেট্রোলিয়াম জেলিও মুখে, হাতে, পায়ে ব্যবহারে একই উপকার পাওয়া যাবে।

দামী প্রসাধনের চেয়ে এগুলো খুব বেশি কম কার্যকরী বলা যাবে না। শরীরের যে কোন স্থানের শুষ্কতা দূর করতে আর্দ্রতার জন্য নির্দ্বিধায় এগুলো প্রয়োজন মতো ব্যবহার করুন। বাড়তি উপকারের জন্য নিয়ম মেনে ব্যবহার করুন। এছাড়া ত্বকে বারবার সাবান ব্যবহার করবেন না। শীতে গ্লিসারিন যুক্ত সাবান কিংবা অধিক চর্বিযুক্ত সাবান ব্যবহার করুন ।


শীতে ত্বক ফাটে কেন ?

শীত এলে ত্বক শুষ্ক হয়ে ফেটে যেতে চায়। শীতের সময় ত্বকের এই নাজুক অবস্থা কেন দেখা যায় ?

শীতের সময় বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বছরের অন্যান্য সময়ের চেয়ে কম থাকে। ফলে পরিবেশ অনেক শুষ্ক থাকে। শুষ্ক পরিবেশ সবসময়ই আর্দ্রতা শুষে নিতে চায়। এটাই স্বাভাবিক। এক্ষেত্রেও তাই হয়।

শীতের সময় ঠাণ্ডা ও শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে ত্বকের বাইরের সেই চর্বি উপাদানের আবরণ আণুবীক্ষণিক পথ উন্মুক্ত হয়ে পড়ে। ফলে এই আণুবীক্ষণিক পদে দিয়ে ত্বকের অভ্যন্তরস্থ পানি ও পরিবেশের আকর্ষণে বেরিয়ে আসে। আর তাই শীতের সময় একটুতেই শরীরের নাজুক ত্বক, যেমন- ঠোঁট, হাত-পা, মুখমণ্ডল শুষ্ক খড়খড়ে হয়ে ফেটে যেতে থাকে। শরীরের অন্যান্য অঞ্চলের ত্বক ততটা নাজুক নয় বলে তা আর একটু অযত্নেই ফেটে যায় না। তবে কিছুটা শুষ্ক তো হয়ই।

শীতে ঠোঁট কেন ক্ষতিগ্রস্ত হয় ?

শীতের সময় ঠোঁট যতটা অত্যাচার সহ্য করে শরীরে অন্য কোন অংশ বোধহয় ততটা করে না। শীতের আঘাতে ঠোঁট সবার আগে ক্ষতিগ্রস্ত হয় কেন ?

ঠোঁট একটি আকর্ষণীয় ও কমনীয় নাজুক অঙ্গ। শরীরের অন্যান্য অঞ্চলের ত্বক মোটামুটি পনেরটির মত আণুবীক্ষণিক স্তর নিয়ে গঠিত। ঠোঁটের ক্ষেত্রে সেরকম স্তর রয়েছে মাত্র তিন থেকে পাঁচটি। ফলে ত্বকের প্রতিরক্ষা কিছুটা কম থাকে। এই স্বল্প প্রতিরক্ষার কারণে শীতের বা ঠাণ্ডা শুষ্ক আবহাওয়ায় ঠোঁট সবার আগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। একটু ঠাণ্ডা ও শুষ্ক আবহাওয়াতেই ফেটে চৌচির হয়ে যায়। আকর্ষণীয় ঠোঁট তখন আকর্ষণহীন ও যন্ত্রণার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।


ঠোটের দুর্বল গঠন শীত ছাড়া বছরের অন্যান্য ঋতুতেও ঠোঁট শরীরে অন্যান্য স্থানের ত্বকের তুলনায় একটু শুষ্কই রয়ে যায়। এটাও কি ঠোঁটের ত্বকের দুর্বল গঠনের জন্য হয়, নাকি আরো কিছু কারণ রয়েছে ?

শরীরের অন্যান্য স্থানের ত্বকের তুলনায় ঠোঁটের ত্বক গঠনগতভাবেই কিছুটা নাজুক। এছাড়া ঠোঁটে কোনো তৈল গ্রন্থি বা চর্মগ্রন্থি নেই, নেই ত্বকের রঞ্জক পদার্থ (মেলানিন) উৎপাদনকারী কোষ। কাজেই ঠোঁটে আর্দ্রতা ও কোমলতা রক্ষার জন্য ঠোঁটের নিজস্ব কোনো ব্যবস্থা নেই।

এছাড়া রোদের অতিবেগুনি রশ্মির ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষার জন্য ঠোঁটের নিজস্ব কোন ক্ষমতা নেই। এছাড়া শরীরের অন্যান্য অঞ্চলকে যেমন কাপড়-চোপড় দিয়ে আবৃত করে শীতের প্রভাব থেকে রেহাই দেয়া যায়, ঠোঁটের ক্ষেত্রে তা সম্ভব নয়। কাজেই সাধারণ পরিবেশেই ঠোঁটের অবস্থা একটু ঝুঁকিপূর্ণ থাকে আর শীতের সময় সেই ঝুঁকি একটু বেশি থাকে।


ঠোঁটের সুরক্ষা কিভাবে নিব
ঠোঁটের সুরক্ষা কিভাবে নিব

শীতে ঠোঁটের সুরক্ষা

শীতের আঘাত থেকে ঠোঁটকে রক্ষা করতে হলে করণীয় কী ? ঠোঁট রক্ষার এই ব্যবস্থা কি আগে থেকে নেয়া ভাল?

শীতের আক্রমণ থেকে নাজুক ঠোঁটকে রক্ষা করতে হলে ঠাণ্ডা ও শুষ্ক আবহাওয়া এবং ঠোটের উপরিভাগ এই দুইয়ের মাঝে বাধার দেয়াল তৈরি করতে হবে। এই বাধার দেয়াল তৈরির জন্য ঠোঁটের উপরিভাগে তৈলাক্ত উপাদানের স্তর লেপ্টে দিতে হবে।

শীতের শুরুতেই ঠোঁট শুষ্ক হতে থাকে এবং এক সময়ে ঠোঁটের চামড়া উঠতে উঠতে তা ফাটা শুরু করে। ঠোঁটে এই ধরনের যন্ত্রণাদায়ক বাজে অবস্থা সৃষ্টি হওয়ার আগেই প্রতিরোধক ব্যবস্থা নেয়া ভালই নয় উত্তম বলে গণ্য করা যেতে পারে।


ঠোটে শীতের প্রসাধন ঠোঁটের সুরক্ষার জন্য শীতের শুরুতেই ঠোঁটে কী কী প্রসাধন ব্যবহার করা যেতে পারে ? 

শীতের শুরুতেই ঠোঁটে শুষ্কভাব দেখা দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঠোঁটের উপর পেট্রোলিয়াম জেলির আবরণ দিতে হবে। ঠোঁটের আর্দ্রতা রক্ষার জন্য অর্থাৎ শুষ্কতা রোধ করার জন্য বিভিন্ন রকম প্রসাধন রয়েছে। প্রসাধনগুলো হচ্ছে— লিপজেল, চ্যাপস্টিক, ভেসিলিন বা পেট্রোলিয়াম জেলি, গ্লিসারিন-যা ব্যবহারে সহজেই ঠোঁট স্বাভাবিক থাকে।


যাদের ঠোঁট বেশি ফাটে

যাদের ঠোঁট একটু বেশি ফাটে তাদের ক্ষেত্রে করণীয় কী ?

ঠোঁট একটু বেশি ফাটার প্রবণতা থাকলে বা বেশি শুষ্ক হয়ে থাকলে লিপজেল, চ্যাপস্টিক, ভেসিলিন/পেট্রোলিয়াম জেলি, গ্লিসারিন ইত্যাদি বারবার ঠোঁটে লাগাতে হবে। অর্থাৎ সব সময়েই ঠোঁটে উল্লেখিত প্রসাধনের কোনোটি লাগিয়ে রাখতে হবে।

কাজেই যেসব কারণে ঠোঁটের প্রসাধন মুছে যেতে পারে যেমন— কোনো কিছু পান করা, খাওয়া দাওয়া, গোসল ইত্যাদির পর ঠোঁটে আলতোভাবে ভেসিলিন/ প্রেটোলিয়াম জেলি বা গ্লিসারিন লাগিয়ে দিতে হবে। রাতে শোবার আগে এইসব ব্যবস্থা গ্রহণ করলে বেশ উপকার পাওয়া যায়।


ঠোঁটে আর্দ্রতারক্ষক প্রসাধন লাগানোর নিয়ম

ঠোঁটের আর্দ্রতারক্ষক উপকরণ যেমন— ভেসিলিন/গ্লিসারিন কখন লাগানো সবচেয়ে ভাল ?

ঠোঁটের আর্দ্রতারক্ষক বা শুষ্কতারোধক উপকরণ বা প্রসাধন ঠোঁট কিছুটা আর্দ্র ভেজা-ভেজা ভাব থাকা অবস্থাতেই লাগানো ভাল। এ সময় ঠোঁটের মধ্যে শোষিত পানিটুকু সঞ্চিত অবস্থায় থাকে । কাজেই তখন ঠোঁটে ভেসিলিন/গ্লিসারিন লাগালে সঞ্চিত পানিটুকু সঞ্চিত অবস্থায়ই থাকে। শুষ্ক পরিবেশ ঠোঁটের ত্বকের সঞ্চিত পানিকে আর শুষে নেয়ার সুযোগ পায় না।

গোসলের পর কিংবা কোন কিছু পান করার পর ঠোট টিস্যুপেপার, রুমাল কিংবা তোয়ালে দিয়ে আলতো করে চেপে বাড়তি পানি মুছে নিয়ে তখনই ভেসিলিন/গ্লিসারিন লাগালে ঠোঁটের মধ্যে পানি সতি অবস্থায় থাকবে এবং ঠোঁটে বাড়তি সজীবতা আসবে। কিন্তু ঠোঁট শুষ্ক হওয়ার পর ঠোঁটে ভেসিলিন/গ্লিসারিন লাগালে ঠোঁটের শুষ্কতা দূর হবে তবে ঠোঁটে বাড়তি সজীবতা থাকবে না।


শীতে ঠোট লিপস্টিক প্রসঙ্গে

শীতের সময় ঠোঁটে লিপস্টিক ব্যবহার করলে কি ঠোঁটের কোন ক্ষতি হয় ?

শীতের সময় ঠোঁটে লিপস্টিক দেয়ার একটা সুবিধা আছে। কারণ কিছু কিছু লিপস্টিকে ভেসিলিন জাতীয় পদার্থ থাকে। যা ঠোঁটকে আর্দ্র রাখতে সাহায্য করে। তবে ম্যাট জাতীয় লিপস্টিক থেকে এই সুবিধা পাওয়া যাবে কি-না বলা মুশকিল।


ঠোঁটের যত্নে কার্যকর প্রাসাধন 

শীতে ঠোঁটের যত্নে অনেক রকম প্রসাধন রয়েছে। এইসবের মধ্যে কোন্ ধরনের প্রসাধন ঠোঁটের জন্য অধিকতর যত্নশীল?

ঠোঁটের যত্নের বিবেচনায় ভেসিলিন/পেট্রোলিয়াম জেলি জাতীয় প্রসাধনই অধিকতর কার্যকরী। ঠোটের জন্য স্বল্পমূল্যে কার্যকর প্রসাধন।

 

অল্প দামও বেশি কার্যকারিতার বিবেচনায় কোন ধরনের প্রসাধনকে ঠোঁটের জন্য বেছে নেয়া উচিত ? 

স্বল্প মূল্যে ও অধিকতর যত্নের বিবেচনায় গ্লিসারিনকেই ঠোঁটের যত্নে প্রাধান্য দেয়া উচিত। গ্লিসারিন স্বল্পমূল্যে সবচে' ভাল আর্দ্রতারক্ষক প্রসাধন বা ময়েশ্চারাইজার।


মুখে ধুলোবালির আস্তরণ

শীতের শুষ্ক পরিবেশে ঘরের বাইরে বেরুলেই ধুলোর ধূসরতা চোখে পড়ে। ধূলিময় এই পরিবেশ মুখশ্রীকে ম্লান করে দেয়। এ অবস্থায় মুখশ্রীর সৌন্দর্যকে ফিরিয়ে আনতে করণীয় কী ?

শীতের শুষ্ক পরিবেশ সবকিছুকে এতটাই ধূলিময় করে রাখে যে বিনা বাতাসেই চারিদিকে ধূলির ধূসরতা চোখে পড়ে। ধূলিময় এই পরিবেশ যতটা এড়িয়ে চলা যায় ততটাই ভাল । বাইরের ধূলিময় পরিবেশ থেকে ঘরে ফেরার পর মুখ সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। 

মুখ ধোয়ার পর টাওয়েল দিয়ে চেপে (ঘষে নয়)মুখ মুছে মুখে কোল্ড ক্রীম,ময়েশ্চরাইজার কিংবা ভেসিলিন/ গ্লিসারিন ইত্যাদির যে কোনটি মুখে লাগিয়ে নিতে হবে। এতে মুখের সৌন্দর্য অটুট থাকবে।


মুখে বারবার সাবান দেয়া কি ঠিক ?

বারবার সাবান দিয়ে মুখ ধুলে শীতকালে অনেকেরই ত্বক রুক্ষ হয়ে যায়। আবার কারো ক্ষেত্রে একবার দু'বার সাধারণ টয়লেট সোপ দিয়ে মুখ ধুলেই ত্বক খসখসে হয়ে যায়। কাজেই ত্বকের কমনীয়তা রক্ষা করবে কিংবা ত্বককে রুক্ষতা থেকে রেহাই দেবে সে রকম কোনো সাবান আছে কি ?

শীতের সময় বাইরের ধূলিময় পরিবেশ থেকে ধূলোমাখা মুখশ্রী নিয়ে ঘরে ফেরার পর মুখমণ্ডল পানি দিয়ে ধুয়ে নেয়া ছাড়া বিকল্প নেই। মুখ সাবান দিয়ে ধোয়ার কারণে মুখমণ্ডলের ত্বক কিছুটা রুক্ষ হয়ে যেতে পারে।বারবার সাবান দিয়ে মুখ  খুলে কারো কারো মুখমণ্ডল আরো বেশি রুক্ষ হয়ে পড়ে। ওইসব ধোয়ার কাজে ময়েশ্চারাইজিং সোপ ব্যবহার করাই ভাল।

এছাড়া ক্রিমবার ও ক্লিনজার এই দু'য়ের সমন্বয়ে তৈরি সাবানও রয়েছে। কিংবা ব্যবহার করা যেতে পারে। শীতের সময় ময়েশ্চারাইজিং নিউট্রাল ধরনের ব্যবহারে ত্বকের পেলবতা রক্ষিত হয়।


ময়েশ্চারাইজিং সাবান ময়েশ্চারাইজিং যুক্ত সাবানগুলো চেনার উপায় কি ?

সাবানের প্যাকেটের গায়েই লেখা থাকে সাবানটি ময়েশ্চারাইজিং কি-না। বিদেশি সাবানের প্যাকেটের গায়ে সাবান সম্পর্কে তথ্য দেয়া থাকে। অতিরিক্ত ক্রিম যুক্ত বা ক্রিমবার, ক্লিনজার এবং ময়েশ্চারাইজার এই বিষয় গুলো সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে সাবান বেছে নিতে হবে। সাধারণভাবে ময়েশ্চারাইজিং সাবানগুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাদা রঙের হয়ে থাকে। কাজেই গায়ে মাখা সাবান কেনার সময় ভাল কোম্পানির সাদা রঙেরটি বেছে নেয়া যেতে পারে।


রুক্ষ ত্বক পরিষ্কারের উপায়

কারো কারো ত্বক এমনিতেই কিছুটা রুক্ষ। এই রুক্ষ ত্বকের মুখমণ্ডল শীতের সময় পরিষ্কার করার জন্য বারবার ধুলে আরো রুক্ষ হয়ে পড়বে। এক্ষেত্রে মুখ পরিষ্কার করার জন্য কী ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে ?


যাদের ত্বক এমনিতেই রুক্ষ তাদের ক্ষেত্রে বারবার সাবান দিয়ে মুখ ধোয়াটা ঠিক হবেনা। এক্ষেত্রে ক্লিনজার ব্যবহার করা যেতে পারে। মুখে ক্লিনজার মেখে টিস্যুপেপার বা কোমল কাপড় দিয়ে মুছে সঠিকভাবে পরিষ্কারের কাজটি করতে হবে। এছাড়া ভাল ময়েশ্চারাইজিং সাবান দিয়ে মুখ ধুলে সঙ্গে সঙ্গে তোয়ালে দিয়ে চেপে চেপে পানিটুকু শুষে নিয়ে তখনই মুখের ভেজাভাব থাকা অবস্থায় ভাল কোল্ডক্রীম বা ময়েশ্চারাইজার কিংবা গ্লিসারিন বা ভেসিলিন মেখে নিলেই ত্বক সজীব থাকবে।


আমাদের শেষ কথা

শুষ্ক পরিবেশ মানুষের ত্বক থেকে আর্দ্রতা হরণের প্রক্রিয়ায় ত্বক থেকে জলীয় পদার্থ শুষে নিয়ে যায়। এ ছাড়া ত্বকের বাইরের স্তরে চর্বি জাতীয় উপাদানের (লিপিড) মিশ্রণে তৈরি আবরণ থাকে।


ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় ত্বকের এই আবরণও কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়ে। আর বয়স্কদের ক্ষেত্রে সেই আবরণটি এমনিতে দুর্বল হয়ে পড়ে। সাধারণভাবে ত্বকের বর্হিভাগে চর্বিজাতীয় উপাদানের আবরণটি ত্বকের অভ্যন্তরে পানির যাওয়া আসাকে নিয়ন্ত্রণ করে।



Post a Comment

Previous Post Next Post

Contact Form